সাধারণ কিসসা

ডোবার পারে ঘর।
সারি ধরে ঘুমায় কত আপন পর।
থাকে চাকুরে, শ্রমিক, ছাত্র, বালক,
এদেরেই এক জন রিক্সা চালক।
এক সুঠাম দেহী যুবক নাম রবিন,
চুক্তিতে চালায় রিক্সা সারাদিন।
ঘরে যখন ফিরে, ক্লান্তিতে ঘিরে,
নেয়ে খেয়ে যেই চিত,
নিদ্রায় কাঁদা এই প্রতি দিনের রীত।
ঐ ঘরেতে মশারি যত,
বাহিরে মশার ভীড় তত।
ভোরে মেলে সাওয়ারি একজন,
অল্প গন্ধ মস্ত ঝোলা পাট কিমবা শণ।
বিড়ি ফোঁকা, পান খাওয়া, কাপড় ছেঁড়া,
বলে, ‘ও হে, গিরামে কি আড় হবে ফেরা!’
রবিন,’ মসাই, কাম নাই গিরামে।
তাইত শহরে আসা।
এ কাজ কঠিন,
আর ঘুমেও সব গায়ে গায়ে ঠাসা।
বাপের চিকিৎসা নাই,
কষ্ট করে তবে কিছু পাঠাই।
সাওয়ারি,’ আচ্ছা যদি তুমি আজ
পাও কোটি টাকা তখন করবে কি।’
রবিন হাসিতে ঘুটে।
‘ একটা টাকাও কেউ দেয় না, মশাই,
পাবো কনে কোটি মিছেই কোন লুটে।
সাওয়ারি,’ আরে শুধু মনে মনে ভাবো,
কোথাও পেয়েছো, তারপর কি করবে।’
রবিন,’ দেশ গিরামে যাবো চলে,
যুবক হব এক দলে।
হবে শুরু লাগান ফল ফলাদির বৃক্ষ,
মাছের চাষ, পশু পালন, শাক সবজি ফলন,
ফসল বোনা, খাল কাটা, বসাবো পানির কল।’
সাওয়ারি,’ তোমায় লাগে কথায় পাকা।
তাই তোমাকেই দিব এই বস্তা ভরা কোটি টাকা।
আমার পুত্র, কন্যারা নালায়েক।
এই কষ্টের টাকা তারা চায়,
দুদিনের আয়াসে শেষ করবে ভয়ানেক।
তাই মোর এই বাস, যাতে পথে ডাকাত না ধরে।
নোংরা কাপড় আর দুর্গন্ধ বস্তা, ওদের নজর না পরে।
এতো বৎসর, শহর থেকে শহরে ঘুরি,
যদি পাই সাধারন জন,
যে সুচিন্তায় ভরপুর,
তারেই দিব সকল এই ছিল পণ।
শেষ করো কষ্টের দিন,
আর আমি যাবো দূর আশ্রমে অচিন।’

-গিনি ইসলাম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *