মৃত্যুর আয়োজন

আলেয়ার পথে রোজ আমাদের হেঁটে ফিরে আসা।
যে কটা উল্কাপাত বুঝেছে খ্যাতির পরিভাষা–

পৃথিবীর চোখে সব ছাই হয়ে উবে গেছে কবে।
কেবল কি অভিশাপে আমার পতনে, ক্ষীণ স্তবে–

জানাজার চিৎকারে শুনিয়েছে নিষ্ঠুর বাণী,
“তোমার শিয়র থেকে ছিটকে’ও মরবো না জানি…”!

বিষাদ গোপন রেখে, গঙ্গার বুকে ওড়া চিলের
ডানার স্পর্ধা, যেন বিকেলের ক্লান্ত মিছিলে’র–

ব্যর্থ স্লোগান। তবু কবিতায় মোড়া হাত দুটো–
চেয়েছে ফেরাতে দ্রোহে রাষ্ট্রে’র দিকে দৃঢ় মুঠো।

এখনো স্মৃতির তীর বুকে গেঁথে পুরোনো সে মালি
রেখেছে ফুলের টবে পাথরের কুচি, চোরাবালি।

এখনো পাল্টে যায় মুখের চেয়ে দ্রুত, তারিখেরা
এখনো মরণ জেনে ঝড়ের নদীতে প্রেমিকেরা–

অপেক্ষা কাঁচ দিয়ে ফালাফালা করে নিয়ে চোখ,
খিদের প্রবাদে রাখে একমুঠো আতপের শোক।

ঘুমিয়েছে ঝাউবন, ঘুমিয়েছে জোনাকি’রা, খাদে।
জেগেছি আমরা শুধু, বন্ধুর মৃতদেহ কাঁধে…

মুকুট ছিন্ন করে সুখের পালকগুলো, দূরে–
বুকেতে আড়াল করে, বহু দেশ, বহু পথ ঘুরে–

ছায়াপথে হেঁটে এসে পেয়েছি যে শীতের খবর,
তোমার দহন জুড়ে প্রতীক্ষা রেখেছে কবর।

হয়তো তুমিও রোজ, ঘষে যাওয়া আরশির ফলায়–
জীবন খুঁজেছো হাততালি আর ব্যথা নিয়ে চলায়।

হয়তো তুমিও রোজ বুকে বেঁধে কবিতার খাতা–
লেখনি কিছুই। স্রেফ নিভৃতে লিখেছে বিধাতা,

পলকে জমেছে হিম, কফিনে নেমেছে ক্ষীণ শীত, ও–
কেঁদেছি দু’জনে রোজ, একান্তে…দুজনার ভিতর…

-খান সামিন রাহমান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *