মাতৃত্ব

-আগে কখনো ব্লাড দেন নাই??

-দিয়েছিতো!!

-তাহলে কাঁপছেন কেন?? সুঁই ভয় পান??

-জ্বী না!!

-তাহলে??

-এর আগে অনেকবার রক্ত দিয়েছি কিন্তু এত সুন্দর কোন তরুনী এই প্রথম রক্ত নিচ্ছে!! আউচ!! ব্যাথা দিলেন কেন?? মেয়েটা কি নিষ্ঠুরের মত সুঁই দিয়ে ব্যথা দিয়ে হাসতে হাসতে চলে যাচ্ছে!! এই মেয়ে এখানে ইন্টার্নি করছে মনে হচ্ছে!! কিন্তু এমন নিষ্ঠুর মেয়ে ডাক্তার হলে রোগী মেরে ফেলবে নিশ্চিত!! কি নির্দয় মানুষ ব্যথা দিয়ে হাসে!! অবশ্য তার হাসিতে ব্যথা হাতের চেয়ে বুকে বেশি হচ্ছে!! কি সুন্দর বাকা দাঁত মেয়েটার!! কিছু সুন্দর সত্যি কষ্টের!! একটা না পাওয়ার কষ্টের!! এই মেয়েকে আমি কেন পাবো না সেই কষ্টের!! কিসের রক্ত দিবো মন পড়ে আছে মেয়েটার কাছে!! কই যে গেলো সে!! একটু পর হাসপাতালের একজনকে জিজ্ঞেস করলাম এখানের ডাক্তার আপা কই?? উনাকে ডাকেন একটু!!

-কি হলো আপনার?? -আরে কোথায় ছিলেন আপনি?? -আমাকে কি দরকার আপনার? শান্ত হয়ে শুয়ে থাকুন, ব্লাড দেয়ার সময় এত কথা বলতে হয় না!! -আপনি পাশে থাকেন না প্লিজ!! আমার না খুব ভয় করছে!! -আরে আজব আপনি বাচ্চা মানুষ নাকি?? ভয়ের কি আছে?? আপনি না এর আগে ব্লাড দিয়েছেন?? তো ভয় পাচ্ছেন কেন? – আরে ব্লাড দিতে না, ভূতের ভয় হচ্ছে খুব বুঝলেন?? আপনি যাওয়ার পর কে জানি আমার বেডের নিচে বসে হাসতেছে আমি নিজের কানে শুনেছি!! -আজব কথা বলবেন নাতো!! দুনিয়ার মানুষ আশেপাশে আর ভুত আসবে আপনার বেডের নিচে হাসতে!! আচ্ছা ব্লাড দিচ্ছেন যাকে মানে ঈশিতা আপু, সে আপনার কি হয়?? -আমার কাজিনের গার্লফ্রেন্ডের বড় বোন!! -আপনি রানা ভাইয়ের কাজিন?? -জ্বী!! রানাকে চেনেন আপনি?? -হ্যা চিনি!! কারন আমি মিথিলার বান্ধবী!!

-মিথিলা কে??

-ওমা আপনার কাজিন রানা ভাই যার সাথে প্রেম করে!! মিথিলা!! আমার স্কুল ফ্রেন্ড!!

-ওহহ ওই মেয়ের নাম মিথিলা?? আমিতো জানতাম তার নাম সোঁনা!! রানাতো সারাদিন ফোনে সোঁনা সোঁনা করে!! আমার কথা শুনে ডাক্তার আপা যে তার বাকা দাঁতে এমন শব্দ করে হেসে উঠবে তা বুঝতে পারি নাই!! আশেপাশের মানুষজন অদ্ভুত হয়ে তাকিয়ে আছে আমাদের দিকে আর সে হেসেই যাচ্ছে!! নাহ এই হাসি সত্যি কষ্ট দেয়া হাসি!! এই হাসির প্রেমে যে পড়ে না সে কোন পুরুষই না!!

আফরিনের সাথে আমার এভাবেই পরিচয় হয় বছর দুয়েক আগে রক্ত দিতে গিয়ে!! অবশ্য তাকে আমি আফরিন না, ডাক্তার আপা বলেই ডাকি সবসময়!! কিছুদিন ধরে ডাক্তার আপা আর আমার প্রেমে খুব ঝামেলা যাচ্ছে!! সে আজকাল আমাকে খুব এড়িয়ে যাচ্ছে!! অথচ আমাদের দুই বছরের সম্পর্কে তার সাথে আমার কখনই কোন রকম ঝামেলা হয় নাই!! কিন্তু আজকাল খুব অবহেলা করে সে আমাকে!! এর কারন অনুসন্ধানে মাঠে নামালাম আমার কাজিন ও তার গার্লফ্রেন্ড সোঁনাকে!! আমার বাসায় আফরিন আর আমার বিয়ে মোটামুটি পাকা ধরেই নিয়েছে আর আফরিনের বাবা মা মেয়ে বলতে পাগল মেয়ে যদি বলে, আব্বু আমি একটা কলাগাছ কে বিয়ে করবো তারা বলবে আলহামদুল্লিহা মা!! এটা একটা ইতিহাস হয়ে থাকবে মা!! তা পাত্র কোথাকার মা, মুন্সিগঞ্জ?? আর এখন তার আমার প্রতি এমন অবহেলার আচরণের কোন কারন খুঁজে পাচ্ছি না আমি!!

আমার বাসায় মানুষ বলতে আমি আর আম্মা!! আমার কোন ভাই বোন নেই আর আব্বা মারা যান অনেকদিন হয়!! বাসায় আম্মা আমাদের প্রেমের বছর খানেকের মধ্যে আফরিনের কথা জানতে পেরেই উঠে পরে লেগেছেন আমাদের বিয়ে দিতে!! তিনি নাকি যেকোনো দিন মারা যেতে পারেন তাই আমাকে বিয়ে দিয়ে আগে নাতি নাতনীর মুখ দেখবেন তারপরে মরবেন!! একমাত্র সন্তানের ছেলে মেয়ের মুখ না দেখে তিনি মরবেন তা কোনদিনও সম্ভব না!! একদিন আমাকে ডেকে বলেন, আমার হাতে সময় খুব কম!! আজরাইল প্রতিদিন আইসা ঘরের দরজা নক করে বুঝলি!! বুঝায়া শুনায়া বলছি নাতি নাতনীর মুখ দেখি তারপর আসেন!! কয়টাদিন সময় দেন আমাকে, ছেলে প্রেম করে যে মেয়েটার সাথে তার কি একটা এক্সাম সামনে এরপরেই বিয়ে ইন শাহ আল্লাহ!! বিয়ে হইলেই বউমারে বলবো ছেলে মেয়ে নিয়ে নিতে!! কয়টা দিন সময় দেন জনাব!! তুই বল এভাবে আমি আজরাইলকে কতদিন ঠেকাইতে পারবো?? একদিনতো তিনি বলেই বসলেন, রাহেলা বেগম তোমার কথা আর বিশ্বাস যোগ্য না!! একটা মেয়ে এক বছর ধরে এক্সাম দেয় এই সব কোন ধরনের এক্সাম?? মেয়ের ঠিকানা দাও আমি গিয়ে দেখে আসি সে কি এক্সাম দেয়!! বল তুই উনাকে কতদিন এভাবে ঠেকাতে পারবো?? আমার প্রতিতো উনার বিশ্বাস উইঠা যাচ্ছে দিনদিন!!

আম্মার কথা শুনে মাঝে মাঝে ভয় করে আবার মাঝে মাঝে হাসি আসে খুব!! আসলে আমি জন্মের পরে আম্মার জরায়ুতে সমস্যা হয়!! অপারেশন করে জরায়ু কেটে ফেলেন অথচ আমার আম্মার শখ ছিল তার ঘর ভর্তি ছেলেমেয়ে হবে!! ছোট বাচ্চাকাচ্চা দেখলেই তিনি অস্থির হয়ে যান আদর করতে, কোলে নিতে!! বাচ্চাকাচ্চার অভাব পূরণ করতে আম্মা আমাদের এতিমখানার বাচ্চাদের সাথেই পরে থাকেন সারাদিন!! এই এতিমখানা আমার দাদা করেছিলেন, দাদার পরে আব্বা এতিমখানাটা দেখাশুনা করতেন এখন আম্মা দেখেন!! এতিমখানার ছেলে মেয়ে গুলা আম্মাকে আম্মা বলেই ডাকে!! এদের এখানে নতুন কেউ আসলে আম্মা গিয়ে তার নতুন নাম রেখে আসেন!! যেদিন তার নামকরণ হয় সেদিনটাকেই তার জন্মদিন ঘোষণা করেন আম্মা!! এরপর বছরের কোন না কোন মাসে তাদের কারো না কারো জন্মদিন থাকে আর আম্মা মনের আনন্দে তা পালন করেন!! এভাবেই সময় যায় আম্মার আর মাঝে মাঝে আমার বিয়ে নিয়ে উঠে পরে লাগেন!! এতদিন পড়া লেখা শেষ হয় নাই দেখে খুব একটা চাপ দিতে পারেন নাই, কিন্তু এখন এর পারছি না আম্মাকে নিয়ে, কিছু হলেই আজরাইলের সাথে উনার কি কথা হয় শুরু করে দেন!! এরমধ্যে আফরিনের ইদানীং এমন দূরদূর আচরণের কারন জানাতে ব্যর্থ আমার কাজিন আর তার সোঁনা!! তাই একদিন নিজেই খুব করে ধরলাম আফরিন কে!!

-কি সমস্যা তোমার আফরিন?? -কোন সমস্যা নাই, সমস্যা হবে কেন??

-সমস্যা নাই তাতো না!! কিছু একটা সমস্যা তোমার হচ্ছে!! আমার সাথে শেয়ার করবা?? তোমার সমস্যা জানার অধিকার আমার নিশ্চয় আছে?? তাই না?? অন্যকারো প্রেমে পড়েছো নাকি?? সেটাও বলতে পারো আমাকে!! -হ্যাঁ!! অন্যকারো প্রেমে পড়েছি!! বিয়েও ঠিক হয়েছে!! ছেলে ডাক্তার!! ডাক্তার মেয়ে ডাক্তার ছেলে বিয়ে করবে সেটাই নরমাল তাই না??

-আচ্ছা!! এটাতো সুখবর!! ভালো প্রস্তাব!! -তাই আনন্দ লাগছে তোমার??

-অবশ্যই!! তোমার বিয়ে আমার আনন্দ লাগবে না?? ছেলে থাকে কই?? -ছেলে কই থাকে দিয়ে কি করবে??-ছেলেকেও অভিনন্দন জানিয়ে আসতাম!! বিয়ের পর তারে আমি কি ডাকবো দুলাভাই?? -ফাইজলামি বন্ধ করবে??

-আচ্ছা ফাইজলামি বন্ধ এখন বল কি হয়েছে তোমার?? শোনো তুমি যা বলবে আমি হাসিখুশি মনে মেনে নিবো!! কিন্তু সত্যিটা বলবে!! সত্যি যদি বল তোমার অন্য কাউকে ভালো লেগেছে বা তোমার বাসা থেকেই তোমার বিয়ে ঠিক করছে আমি হাসি মনে সরে যাবো কিন্তু আমাকে সত্যি কথাটাই বল!! -মুহিব!! আমার না কখনো ছেলে মেয়ে হবে না!! আমার জরায়ুতে সিস্ট ধরা পরেছে আর তার আকার এতটাই বড় যে খুব সম্ভবত আমার জরায়ু ফেলে দিতে হবে!! আমি তোমার মায়ের কথা জানি আন্টির কত শখ ছেলের সন্তান দেখবেন!! তিনি জেনে শুনে কি আমাকে মেনে নিবেন?? আর আমি নিজেইতো চাচ্ছি না তোমার সাথে আমার সম্পর্ক আর বাড়ুক!! কেনই বা তুমি জেনে শুনে এমন একটা মেয়েকে নিয়ে সংসার করবে যে কখনো মা হবে না!! তুমি আমাকে ভুলে যাও মুহিব!! অল্প কয়দিন খারাপ লাগবে এরপর সব ঠিক হয়ে যাবে একদিন!! আফরিনকে আমি কিছুইতেই বুঝাতে পারলাম না যে তার ছেলে মেয়ে হবে না এটা কোন সমস্যাই না!! কত মানুষ নিঃসন্তান তাই না?? আর আম্মাকে আমি বুঝাবো যদি তিনি রাজি না থাকেন!! কিন্তু সে কিছুতেই আর আমাদের সম্পর্ক রাখতে চাচ্ছে না!! আমার আম্মা খুব মনোযোগ দিয়ে আমার কথা শুনলেন কেন আফরিন আমাকে বিয়ে করবে না!! আমার কথা শেষে আম্মা বলল, একটা মেয়ের বাচ্চা হবে না দেখে তুই তারে বিয়ে করবি না?? এমন বান্দর ছেলে আমি পেটে ধরছি কেমনে?? থাপড়ায়া তোর দাঁত ফালায়া দিবো বেয়াদব কোথাকার!! -আজব আমিতো বলি নাই তাকে বিয়ে করবো না!! সেই না আমাকে বিয়ে করতে চাচ্ছে না তুমি রাজি হবা না দেখে!!

-ওই মেয়েরেও থাপড়ায়া দাঁত ফালায়া দিবো বেয়াদব মেয়ে কোথাকার!! বাচ্চা হবে না দেখে আমার ছেলেকে বিয়ে করবে না!! কত্ত বড় সাহস মেয়ের!! বলে আমি রাজি হবো না!! বেয়াদব মেয়ে থাকে কই??

-মোহাম্মদপুর!!

-চল!!

-কই??

-মোহাম্মদপুর!!

-পাগলামি কইরো না!!

-তুই পাগলামির দেখছোস কি??

আসলেই আমার আম্মা যে এমন পাগলামি করবেন সেটা আমি ভাবিনি!! তিনি আমাকে নিয়ে আগে গেলেন আমাদের এতিমখানায়!! সেখানে গিয়ে সবগুলা ছেলেমেয়েকে বলল, তোমাদের বড় ভাইয়ের বিয়ে আজ, চল তোমাদের ভাবিকে আনতে যাবো!! তোমরা সবাই বর যাত্রী!! তোমাদের ভাবি আসতে রাজি না হলে মাথায় করে তুলে নিয়ে আসতে পারবা না?? আম্মার কথা শুনে সবগুলা ছেলেমেয়ে এক সাথে বলে উঠলো, পারবো আম্মা!! তাকায়া দেখস কি সিএনজি রিকশা কি আছে, কয়টা লাগবে ডাক দে, বান্দর ছেলে!! বেয়াদপ মেয়ে বাচ্চা হবে না দেখে নাকি বিয়ে করবে না!! কত্তবড় বেয়াদপ!! আর আমার বান্দর ছেলে তার কথা শুনে ধেই ধেই করে চলে আসছে মেয়েটাকে রেখে!! আমাদের সাথে রিকশা ভর্তি এতগুলা ছেলে মেয়ে দেখে আশেপাশের মানুষ যত না অবাক হয়ে তাকিয়ে ছিল তারচেয়েও বেশি অবাক হয়েছে আফরিনের আব্বা আম্মা!! -ভাই সাহেব আমি মুহিবের আম্মা!! আমার ছেলে আর আপনার মেয়ে একজন আরেকজনকে খুব পছন্দ করে!! এখন আমার ছেলের যোগ্যতা দেখে যদি আপনি মেয়ে বিয়ে না দেন তাহলে এক কথা কিন্তু আপনার মেয়ের বাচ্চা হবে না দেখে আমার ছেলেকে বিয়ে করবে না!! তাহলেতো ভাই সাহেব মেয়েকে থাপড়ায়া দাঁত ফালায়া দিতে হবে!! একটা মেয়ের বাচ্চা হবে না দেখে সে বিয়ে করবে না এটা কোন কথা?? ডাকেন আপনার মেয়েকে!!

ভেতরের রুম থেকে আফরিন এসে কিছুই বুঝতে পারছে না তার বাসায় হচ্ছে কি!! সে একবার তাকায় আম্মার দিকে একবার আমার দিকে একবার ছেলে মেয়ে গুলার দিকে!!

-এই মেয়ে তুমি আমার ছেলেকে বিয়ে করবা না তোমার বাচ্চা হবে না দেখে?? থাপড়ায়া তোমার দাঁত ফালায়া দেয়া দরকার!! আমার বান্দর ছেলেরও থাপড়ায়া দাঁত ফালায়া দেয়া দরকার!! একটা মেয়ে বলল, তার বাচ্চা হবে না আর ওমনি সে ধেই ধেই করে মেয়েটাকে রেখে চলে আসছে!! বান্দর ছেলে কোথাকার!! শুনো মেয়ে, মা হওয়ার জন্য জরায়ু লাগে না!! মমতা লাগে!! এই দেখ এই বড় বান্দরকে নিয়ে আমার ছেলেমেয়ের সংখ্যা চল্লিশজন!! এদের মধ্যে জরায়ুতে ধারন করছি একটা বাকি গুলা বুকে!! বুঝছো মেয়ে মা হতে জরায়ু না, মমতা লাগে!! পাগল মেয়ে এদিকে আসো তোমারে একটু আদর করি!!আমার আম্মা শেষ পর্যন্ত আজরাইলের কাছে ধরা দেন!! ধরা দেয়ার আগে সংসার এতিমখানার সব দায়িত্ব দিয়ে যান আফরিনের হাতে!! আফরিন আর আমার বিয়ে হয়েছে অনেকদিন!! আফরিনের অপারেশন করে জরায়ু ফেলে দেয়া লাগে তাতে আমাদের কোন দুঃখ নাই কারন জরায়ুতে ধারণ ছাড়াই আফরিন এখন ছাপ্পান্নজন ছেলে মেয়ের মা!! এতিমখানার ছেলে মেয়ে গুলা এখন আফরিনকে আম্মা ডাকে!! আফরিন রোজ হাসপাতাল থেকে ডিউটি শেষে এসে তাদের খোঁজ নিতে যায়!! বন্ধেরদিন নিজের হাতে ছোট বাচ্চাগুলাকে গোসল করায়, নিজে তাদের নখ কেটে দেয়, চুল আঁচড়িয়ে দেয়!! পেটে গুতা দিয়ে ডাক্তার আপা তাদের কৃমি চেক করে!! আমি দূর থেকে দাঁড়িয়ে শুধু দেখি আর ভাবী আম্মা ঠিক বলেছেন, মা হওয়ার জন্য জরায়ু লাগে না, লাগে মমতা!! আর এই মেয়েতো মমতার সাগর!! এই সাগরেই ভাসে তার কত সন্তান!! আমি চোখ মুছি, নিশ্চয়ই আমার আম্মাও দূরে কোথাও থেকে আমাদের দেখেন আর চোখ মুছেন!!

-ফজলে খোদা রায়হান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *