বৃষ্টির কাব্য কথা

গোধূলির ছায়ায় নিস্তেজ হওয়া
প্রহরের শেষে অভ্রের ডাক
শুভ্র বাতায়নে ঝড়ো হাওয়ায় প্রহসন
ঢেকে যাওয়া মেঘে ছন্নছাড়া আনায়ন
ক্লান্তিতে ছেয়ে যাওয়া ধূলিকণায়
নিষ্প্রভ আমেজের বার্তা।
নিবন্ত অম্বুদে বাঁধ হারানো বারি
হঠাৎ নিখুঁত ঝর্ণা ধারা বইছে
মেঘেদের ডাকে আর্তনাদ
ছড়িয়ে পড়ছে
সমস্ত অন্তঃকঙ্কাল জুড়ে
বৃষ্টির প্রতিটি কণায় ঝরছে
কারও বিষাদের গল্প।
অপ্রসন্ন মেঘলা আকাশে ছড়িয়ে আছে
ছেড়া পাতায় কালোদাগ।
বর্ষাধারায় নিক্কণ গুলো ধুয়ে পড়ছে
তবুও তা মুছে যাচ্ছে না।
এবেলায় কারও অভিযোগ বেমানান
তবে অভিমানগুলো পালতোলা
নৌকায় ভরে ভাসিয়ে দেয়ার বিকল্প নেই।
এবেলায় হয়তো কারো ক্ষুদ্র
স্বীকারোক্তি রয়েছে
পড়ন্ত আনমনা মনে তা অস্পষ্ট।।
কেউ আবার মেঘেদের প্রেমের টানে
অহর্নিশ ভেসে যাচ্ছে,
নির্নিমেষ হইয়া চাহিয়া আছে
শিউলি ফোটা দিনে
মুগ্ধতায় ফেরার আশায়।
অবিরাম ঝরে পড়া বর্ষণে
লুকানো রয়েছে কিছু তিক্ততা,
অশ্রুর অপর নাম বিসর্জন
আর দুঃখ মানেই বিলাসিতা।
বারির জলে ভিজে গেছে
মসজিদের বারান্দা
আরতীর দীপ নিভে গেছে
কালবৈশাখিতে অঞ্জলির কদম ফুল
বৃক্ষের তলায় অজ্ঞ বকুল।
বদ্ধ ঘরে উষ্ণ অভ্যর্থনায় কৈশোরের স্মৃতি,
নগ্ন পায়ে নুপূরের ঝুনঝুন আওয়াজে
কুড়িয়ে নওয়া শিলাবৃষ্টি ,
বিজলির বজ্রপাতে আনাড়ি দৌড়ানি
তরুর তরে আঁখি লুকিয়ে শঙ্কায় চোখ বুজি।
টিনের চালে পানির ঝনঝনানি,
প্রাচীরে ঘেরা শ্যাওলার বাড়াবাড়ি।
পল্লবিত নীরদে বারির টুকরো লয়ে
কুড়িয়ে লই অদৃষ্টের স্নেহখানি।

নুসরাত সুক্তি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *