দালাল-১
মন্তাজ মিয়া ৭/৮ দিন ধরে ফুরফুরে মেজাজে আছেন৷ তার বড় ছেলেটাকে অবশেষে তিনি বাইরে পাঠাতে পেরেছেন৷ ছেলেটার পড়া শোনার মাথা ছিল না৷ কোনরকমে মেট্রিক পাশ করেছে৷ আই এ তে সুবিধা করতে পারেনি৷ দু’বারে না হওয়ায় ছেড়ে দিয়েছে৷ উনার ছেলের নাম শহীদুল৷ শহীদুল মিয়া৷ ছেলেটা বখে যাচ্ছিল প্রায়৷ সিনেমা দেখা ঘুরে বেড়ানো মোবাইল টেপা বিড়ি খাওয়া গঞ্জে চায়ের দোকানে আড্ডা মেরে বেড়াতো৷
মন্তাজ মিয়া একদিন ছেলেকে ডেকে বললেন এসব কি রে শহীদুল? তরে যুব উন্নয়ন থেইকা কম্পুটারের কোর্সও করালাম আর তুই….
শহীদুল মাথা নিচু করে বলেছিল বাজান! এইহানে কিছু হইবো না৷ আমারে বাইরে পাঠিয়ে দেন৷
মন্তাজ বললেন বাইরে যাইয়া কি করবি? কাম কি জানস তুই?
শহীদুল বলল ক্যান বাজান, উত্তর পাড়ার মুরাদ ভাই, কল পাড়ার জাকির, হেরপরে ধরেন এই যে আমাগো পাড়ার সোমার বাপে, হগলেইতো বিদেশ গেছে৷ কাজকাম কইরা সুন্দরই আছে! দালান তুলছে৷ রমরমা!
মন্তাজ মিয়া বললেন যাওনের কোন ব্যবস্থা আছে! কই যাবি কি করবি ঠিক করছোস!
তিনি আসলে চাচ্ছিলেনও ছেলেটাকে বাইরে পাঠিয়ে দিতে৷ ওখানে গিয়ে কোন রকমে যদি কিছু একটা হয়৷ ছেলে যখন নিজ থেকেই বিদেশের কথা বলল তিনি বুকে বল পেলেন৷
শহীদুল বলল ক্যান বাজান ঐ যে মমিনুল চাচায় আছে না! পাইক পাড়ার৷ হে তো মানুষের কারবার করে৷ রাজন রে দুই মাস আগে মালয়েশিয়া পাঠাইল৷
সত্যি বলতে কি আমারেও বলছে একদিন , মমিনুল চাচায়৷ দেহুম নাকি কথা কইয়া!
মন্তাজ মিয়া চিন্তায় পড়েন৷ টাকা পয়সা কেমন লাগবে কি না লাগবে জানেন না৷ তবু বললেন আইচ্চা দেখ যাইয়া৷ জানাইস আমারে৷
শহীদুল উৎসাহে তার বাজানকে কদমবুসি করে বলে আমি বলে দেখতেছি বাজান!
ছেলেটা যাবার সময়ে ওর যাওয়ার পথে তাকিয়ে আল্লাহকে বলেন আল্লাহ পোলাডা এমনে মানুষ খারাপ না৷ বেকার থাইকা সঙ্গদোষে পড়ছে! তুমি দেইখো….
….
দ্রুত পাসপোর্ট হয়ে গেল৷ ভিসার জন্যও দিয়ে দেওয়া হল৷ মমিনুলের সাথে ভিসা’র জন্য চারলাখ টাকায় রফা হল৷ শহীদুলকে সে মালয়েশিয়া পাঠিয়ে দেবে৷
মন্তাজ মিয়া অনেক কষ্টে ছেলের বিদেশ যাবার টাকার ব্যবস্থা করলেন৷ মমিনুল তাকে আশ্বাস দিল বড় ভাই ডেকে৷ বলল চিন্তা করবেন না ভাইজান৷ আপনের পোলা মাইনে আমারও পোলা৷ ভাল কাজেই ওরে পাঠামু৷ দোকানে কাম করব শহীদুল৷ আমার চেনা মানুষের দোকান….
পাঁচমাসের মধ্যে সব ব্যবস্থা হয়ে গেল৷ মন্তাজ মিয়া যেতে চেয়েছিলেন বিমান বন্দরে৷ মমিনুল বলল ভাইজান আমি আছি৷ আমার লোকরা এরে ভাল হোটেলে রাখবে৷ আর পোলায় তো আপনের লগে মোবাইলে কতা কইবই! সমস্যা নাই৷
চোখে স্বপ্ন নিয়ে মা’কে কাঁদিয়ে শহীদুল ঢাকা গেল৷ ওর ছোট বোনটা তখন কাঁদছিল৷ ছোট ভাইটা অবশ্য এসব বোঝে না৷ সে খুশী৷ তার ভাই বিদেশ যাচ্ছে৷ তার বায়না বিদেশ থেকে তার জন্যে একটা হেলিকপ্টার পাঠানো লাগবে যেটা রিমোট দিয়া উড়ানো যায়৷ শহীদুল ঢাকা পর্যন্ত তার সাথে যোগাযোগ করেছে৷ বাইরে থেকে একবার কথা বলেছিল পৌঁছানোর পর৷ এর পরে আর কথা হয়নি৷ বলেছিল বাজান পেলেইন থাইকা নামছি৷ গাড়ি আইয়া নিয়া যাবে আমাগো৷ চিন্তা কইরেন না৷
ছেলে যাবার এক সপ্তাহ পর সকালে তিনি মেছওয়াক করছিলেন৷ হঠাৎ ভেতর থেকে উনার স্ত্রী’র চিৎকারে মনের মধ্যে কেন জানি ধ্বক করে উঠলো৷ পড়িমরি করে ভেতরে আসলেন৷
উনার স্ত্রী উনাকে মোবাইল দেখিয়ে চিৎকার করে কান্না করছেন আর শুধু বলছেন আমার শহীদুল আমার শহীদুল, ও শহীদুলের বাপ…..
কাঁপা হাতে মন্তাজ মিয়া মোবাইলটা কানে লাগাতেই শুনলেন ছেলের আর্তনাদ৷ বাজান বাজান গো……. আমারে বাঁচান…….।
তিনি চিৎকার করে বললেন তোর কি হইছে রে শহীদুল, ও আব্বা তুই এমনে চিৎকার করতিছিস ক্যান!
অন্য আরেকজনের ভারী গলা শোনা গেল শহীদুলের চিৎকার ছাপিয়ে! সে বলল ছেলেকে জিন্দা চাইলে আমরা যেমনে বলব অমনেই করবি, ওখন ফোন রাখ৷ পরে বলব কি করতে হবে…..
শহীদুলের মা মূর্ছা গেলেন৷ মন্তাজ মিয়া বন্ধ ফোনে কান লাগিয়ে বলেই চলেছেন আব্বা, শহীদুল আব্বা গো…. শহীদুল……
দালাল -২
ঘটনা মোটামুটি ভয়াবহ৷ শহীদুল কে একটা জায়গায় বন্দী করা হয়েছে৷ হাত পা বেঁধে পেটানো হচ্ছে৷ এই খবরটাই সকালে ফোনে দেওয়া হয়েছে ওর বাড়িতে৷ শহীদুলের বাবা অজ্ঞান হয়ে বিছানায় পড়ে গেছেন৷ মনোয়ারা বেগম শহীদুলের মা চোখ মুছে মন্তাজ মিয়ার মাথায় পানি ঢালছেন৷ ক্ষণে ক্ষণে শাড়ির আঁচল দিয়ে চোখ মুচছেন৷
একটু ধাতস্ত হবার পর মন্তাজ মিয়া উঠে বসলেন৷ তিনি মনোয়ারা বেগমকে বললেন বউ শহীদুল এর একি হইল৷ বিদেশ আমার পোলারে কে আটকাইল৷
মনোয়ারা বেগম বললেন আমি কেমনে কব শহীদুলের বাপ! আমি কেমনে কব৷
মন্তাজ মিয়া বললেন ইদ্রিসরে খবর দেও৷ দেখ ইদ্রিস কি বলে!
মনোয়ারা বেগম মহিদুল মানে শহিদুল এর ছোট ভাই কে বললেন তুই দৌঁড় পাইরা তোর ইদ্রিস মামার কাছে যা৷ ওখন দোকান খুলব সে৷ তাড়াতাড়ি আইতে কবি৷
মহিদুল আইচ্চা বলে দৌঁড় দিল৷ সব বুঝতে না পারলেও বড় ভাই যে বিদেশে বিপদে পড়েছে সেটা ভাল ভাবেই বুঝতে পেরেছে৷
ইতোমধ্যে প্রতিবেশীরা উঁকি ঝুঁকি দেওয়া শুরু করেছে৷ ওরা সকালে এই চিৎকার চেঁচামেচি শুনে কৌতুহলী৷ দু’চারজন ভেতরে এসে মন্তাজ মিয়া ও মনোয়ারা বেগমের কাছ থেকে কিছুটা জেনে নিয়েছেন৷
খবর ছড়িয়ে পড়ল মুহূর্তে৷ একান ওকান করে যে খবর শেষপর্যন্ত সবার কাছে পৌঁছল সেটা মূল ঘটনার চেয়েও ভয়াবহ৷ অনেকে বলতে শুরু করল শহীদুলের আঙুল কেটে বাসায় পাঠানো হয়েছে, কেউ বলছে শহীদুল মারা গেছে কেউ বলছে সে কিডনেপ হয়েছে৷
ইদ্রিস মনোয়ারা বেগমের মামাত ভাই৷ মহীদুলের কাছে খবর পেয়েই ছুটে এসেছে৷ এসে দেখল বাড়ির অবস্থা ভয়াবহ৷ প্রতিবেশীরা সবাই মন্তাজ মিয়ার ঘরের বারান্দা আর ঘর দখল করে বসে আছে৷ সামনের ঘরে মন্তাজ মিয়া দিশেহারা দৃষ্টিতে বসে আছেন৷ উপরে পাখা চললেও মরিয়ম শহীদুলের বোন, তাদের বাবাকে হাত পাখা দিয়ে বাতাস করছে৷ তারপরও মন্তাজ মিয়া ঘেমে নেয়ে একাকার!
ইদ্রিস বলল দুলাভাই কি সমস্যা?
মন্তাজ মিয়া চোখ খুললেন৷ উনার চোখ টকটকে লাল৷ বললেন ওরা শহীদুলরে পিটাইতেছে রে ইদ্রিস, আমার শহীদুল চিৎকার পারতেছে রে….
ইদ্রিস উনার কাঁধে হাত রাখল৷ বলল আপনি টেনশান করবেন না৷ বু’জির সাথে কথা বলে দেখি৷ আপনি শুয়ে থাকেন৷
মন্তাজ মিয়া আবার শুয়ে পড়লেন৷ ইদ্রিস ভেতরের ঘরে গেল৷ মহিদুলকে ডাক দিল সে৷ ইদ্রিস বুঝতে পেরেছে এরা কেউই সকাল থেকে কিছু খায়নাই৷ মন্তাজ এর হাতে দু’শ টাকা দিয়ে বলল তুই সামনের হোটেল থাইকা পরোটা আর ভাজি লইয়া আয়৷ আগে সবাইরে কিছু খাওয়াই৷
ইদ্রিস ঠান্ডা মাথার মানুষ৷ সে বুঝতে পেরেছে শহীদুলের বিদেশ গমন সংক্রান্ত কোন ব্যাপারই হবে৷
আগেই সে মন্তাজ মিয়ারে বলেছিল সাবধানে ভেবেচিন্তে কাজ করতে৷ মন্তাজ মিয়া সম্ভবত আবেগের ঠেলায় সে সময়ে তার কথা শোনেনি৷
মনোয়ারা বেগম বসে বসে কাঁদছিলেন৷ পাশের বাড়ীর দুই মহিলা বসে উনাকে ঠান্ডা করার চেষ্টা করছিলেন৷ ইদ্রিস গলা খাকরি দিয়ে বলল আপারা আপনেরা একটু পাশের ঘরে যান, বু’জীর সাথে আমি একটু একা কথা কব৷
ইদ্রিসকে দেখেই তিনি বিলাপ শুরু করতে যাবেন, ইদ্রিস বলল বু’জি কান্না থামান৷ আমারে পুরা ঘটনা খুলে বলেন৷ কান্নাকাটি করে লাভ নাই৷ ব্যাপারটা আমাকে বুঝতে দেন৷
মনোয়ারা আঁচল চাপা দিয়ে আবার কান্না করতে লাগলেন৷
ইদ্রিস ধমকের সুরে বলল বু’জি! কান্না বন্ধ করেন৷ ঘটনা কি খুলে বলেন৷
মনোয়ারা বেগম সকালে পাওয়া কল সহ সবকিছু খুলে বললেন ইদ্রিস কে৷
ইদ্রিস বলল ওরা বলছে আবার কল করবে?
মনোয়ারা মাথা নাড়লেন৷
ইদ্রিস বলল তাহলে আমরা ওদের কলের জন্য অপেক্ষা করি৷ আপনি দুলাভাইরে নিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান৷ প্রেসার মাপায়ে ওষুধের ব্যবস্থা করেন৷ এই ফোনমোন আমি দেখতেছি৷
তার আগে কিছু মুখে দিয়ে যান৷ মহিদুল রে পরোটা আর ভাজি আনতে পাঠাইছি৷
আইচ্চা যাউক হাসপাতালে যেতে হবে না৷ আমি দেখি কি ব্যবস্থা করা যায়…
ইদ্রিস মোটামুটি আধাঘন্টায় এই বাসার অবস্থা স্বাভাবিক করে ফেলল৷ শহীদুল এর ছোট ভাইবোন দুটোকে খাইয়ে মনোয়ারা আর দুলা ভাইকে বসাল খাওয়াতে৷ এরমধ্যে ইদ্রিস তার স্ত্রীকেও ফোন করে আনিয়ে নিয়েছে৷ সে এখন বোন আর বোন জামাইকে দেখছে৷ পরিচিত এক ডাক্তারের সাথে কথা বলে অনুরোধ করেছে একটু এক্ষুনিই ঘুরে যেতে৷ এখানকার পরিস্থিতিটা অবশ্য বলতে হয়েছে৷
ডাক্তার বলেছেন হাতের কাজ শেষ করেই আসছেন৷ দুলাভাই এর এমনিই প্রেসার আছে৷ ঘরে থাকা প্রেসারের ওষুধ দুটো খাইয়ে দিতে বলেছে তার স্ত্রীকে৷
প্রতিবেশীদের বলেকয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছে৷
ঘরের পরিস্থিতি একটু ঠান্ডা হলে ওর দোলাভাইএর মোবাইলটা নিয়ে বসল সে৷ ওরা বলেছে ফোন করবে৷ সেই ফোনের অপেক্ষায়ই সে বসে আছে৷
ঘরটা নীরব৷ দেয়াল ঘড়ির টিকটিক শব্দটা শোনা যাচ্ছে৷
অপেক্ষার প্রতিটি প্রহর দীর্ঘ মনে হচ্ছে৷ হঠাৎ ফোন টা বেজে উঠল৷
ইদ্রিস জীবদিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে বাটনে চাপ দিয়ে বলল হ্যালো…..
দালাল -৩
ফোন নামিয়ে রেখে ইদ্রিস গভীর চিন্তায় মগ্ন হয়৷
মনোয়ারা আর মন্তাজ মিয়া চোখে ভয় কৌতুহল যন্ত্রণা আর জিজ্ঞাসার মিশেলে তার দিকে তাকিয়ে থাকে৷
কাঁপা কাঁপা গলায় মন্তাজ মিয়া বলেন ওরা কি কইল ইদ্রিস? পোলাডা ঠিক আছে তো!
ইদ্রিস কথা বলে না৷
এবার মনোয়ারা বললেন ফোঁপাতে ফোঁপাতে… ইদ্রিস কথা কস না ক্যান!
ইদ্রিস অন্যমনষ্ক ভাবে বলে হু! আপা… দুলা ভাই… আমারে কিছু কন?
মনোয়ারা এবার শব্দ করে কেঁদে ওঠেন৷ মন্তাজ মিয়া ধমকের সুরে বলেন শহীদুলের কি খবর কইল হেরা! বলে হাঁপাতে থাকেন৷
ইদ্রিস বলে দুলাভাই, আপা হেরা দুইলাখ টাকা চায়৷ দুইদিনের মইধ্যে যোগাড় করে দেওন লাগবো৷ দুইদিন পরে আবার মোবাইল করবে৷ না দিতে পারলে…..
ও আল্লাহ… গো……মনোয়ারা চিৎকার করে ওঠেন কথা শেষ হবার পূর্বেই৷
এবার ইদ্রিস ধমক দেয় তির বোন কে৷ চুপ বুজি! চুপ….
দুলাভাই মন্তাজকে উদ্দেশ্য করে বলে আপনেও আর কোন কথা কবেন না৷ আমারে ভাবতে দেন৷
মন্তাজ মিয়া ফিসফিস করে বলেন আমার কাছে আছে কিছু!
ইদ্রিস বলে দুলাভাই টাকা সমস্যা না৷ আমারও মাল কিননের টাকা আছে৷ কিন্তুক টাকা দেওনটা সমস্যার সমাধান না৷
শহীদুল দেশে থাকলে একটা কথা ছিল৷ টাকা দিয়া ছাড়ায়ে আনতাম তারপরে ব্যবস্থা নিতাম৷
কিন্তু শহীদুল আছে বাইরে৷ দেশের বাইরে৷ তুমরা বলতেছো সে মালয়েশিয়ায়৷ কিন্তুক আমার মনে হয় না সে মালয়েশিয়ায় আছে৷ তুমরা ভুল জানো!
তুই কেমনে বুঝলি ইদ্রিস?
আমি বুঝি নাই দুলাভাই আমার মন কইতেছে!
মন্তাজ মিয়া হঠাৎ উঠে দাঁড়ালেন৷ বললেন হালারফো দালাল রে ধরি গিয়া….
ইদ্রিস বলল,
দুলাভাই মাথা ঠান্ডা করেন৷
দালালরে এক্ষন ধরলে হেরা সাবধান হয়ে যাবে৷ আপনের ছেলেরে মাইরাও ফেলতে পারে! এই সব কামই করবেন না৷ এইডা শহীদুলের জীবন মরণের প্রশ্ন৷
মন্তাজ মিয়া আবার ধপ করে বিছানায় বসে পড়লেন৷
ইদ্রিস বলল আপনেরা এসব নিয়ে কোন কথা কারও সাথে কবেন না, আবার বলতেছি কোন কথা কারও সাথে কবেন না৷
টাকার যোগাড় করেন৷ যদি কিছু লাগে আমিও দিতেছি৷ ধরেন গিয়া একলাখ একলাখ বিশ যোগাড় করেন, বাকিটা রাইতে আমি আনতেছি৷
এখন আমি যাই৷ দেখি কিছু ব্যবস্থা করা যায় কি না!
বের হবার পূর্বে নিজের স্ত্রী কে ডেকে বলল তুমি হেগো লগে থাক৷ আমি আসতেছি৷ আর হুন বউ, এবার ফিসফিস করে বলল মাঝেমইধ্যে বাইর হয়া দেখবা ঘরের আসেপাশে এমন কেউ ঘুরে কি না, যাগোরে আগে এই পাড়ায় দেহ নাই!
ইদ্রিসের বউ বলল আমি কেমনে বুঝুম? এডি আমার বুঝনের কতা!
ইদ্রিস বলল তুমি নজর রাইখো৷ বুঝলে বালা, না বুঝলে নাই! আমি ওহন যাই….
ইদ্রিস ওর আপা’র বাসা থেকে বের হবার সময় মহিদুলকে পেল৷ মার্বেল খেলছে৷ ডাক দিল তাকে৷
মহিদুল বলল জে মামুজান!
ইদ্রিস বলল অপরিচিত কাউরে ঘুরঘুর করতে দেখলে চেহারা দেইহা রাখবি৷ কিন্তুক সাবধান কিছু যেন কেউ টের না পায় আর এই ধর,
বলে দশটাকার একটা নোট বের করে দিল মহীদুলের হাতে৷
আবার বলল সাবধান!
তোর ভাইয়ের কতাও কিন্তুক কাউরে কবি না৷
কেউ জিজ্ঞেস করলে বলবি বিদেশে কাম করতে যায়ে ভাই এর হাত কাটছে৷ চিকিৎসা হইতেছে! বুঝলি?
মহিদুল ঘাড় কাত করে৷
চিন্তামগ্ন ইদ্রিস দোকানের দিকে পা বাড়ায়৷
….
-পলাশ পুরকায়স্থ