দহন ( ২য় এবং শেষ পর্ব )

৬.

দরজায় দাঁড়িয়ে শীলা হতবাক, ‘আম্মা, কী হয়েছে?’

‘তুই এসেছিস! এই ছেলেটা আমার ফরহাদের বন্ধু। ফরহাদের কথা শুনে অসুস্থ হয়ে পড়েছে।’

শীলা কয়েক সেকেন্ড দাঁড়িয়ে তাকিয়ে রইল, তারপর পা বাড়াল ভেতরের ঘরে। জহির কিছুটা সুস্থ বোধ করছে, উঠে বসল সে। মতিউর রহমান সাফিয়ার দিকে তাকালেন, ‘মেয়েটা এত দূর থেকে এসেছে, কত ক্লান্ত! মেয়েটাকে খেতে দাও কিছু। মেহমানদেরও নাশতা-পানি দাও। ‘এটা আমার মেয়ে বুঝলে বাবা, নাম শীলা। ঢাকায় একটা ক্লিনিকে কাজ করে, ও-ই এখন সংসার চালায়। প্রায়ই ওভারটাইম করে একটু বেশি রোজগারের জন্য। তাই প্রতিদিন বাড়ি ফিরতে পারে না। বুদ্ধি করে কয়েকজন বান্ধবী মিলে একটা রুম ভাড়া নিয়েছে ঢাকায়, ঐখানেই থাকে। কাজ-টাজ কম হলে সোজা বাড়ি চলে আসে। মেয়েটাও আমার ফরহাদর মতো শান্ত। এইচএসসি’র পর আর পড়তে পারল না। সংসারের হাল ধরতে হলো।’ দীর্ঘশ্বাস ফেললেন মতিউর রহমান।

নাশতার ট্রে টেবিলে রেখে শীলা খাটের পাশের চেয়ারে বসল, ‘আপনি জহির ভাই, তাই না? ভাইজানের কাছে ছবি দেখেছিলাম আপনার। এখন চিনতে পারছি, অনেক মোটা হয়ে গেছেন তো তাই প্রথমে চিনতে পারিনি।’ জহির অবাক হলো, ‘ছবি দেখছো?’

‘হ্যাঁ। পিকনিকের ছবি। ভাইজান খুব বলতো আপনার কথা। পছন্দ করত আপনাকে। বলতো, ‘এইটা হইল আমাগো বাঘের বাচ্চা।’ তাই মনে আছে।’ দীর্ঘশ্বাস ফেলল শীলা।

জহির তাকিয়ে রইল। মেয়েটার মধ্যে কেমন অদ্ভুত একটা কাঠিন্য আছে, এতগুলি কথা বলল কিন্তু একটুও হাসল না। হড়বড় করে কথাগুলি বলে আবার চুপ হয়ে গেল। জানালা দিয়ে বাইরে তাকাল সে। দুপুর প্রায়, যাবার প্রস্তুতি নেয়া দরকার, উঠে দাঁড়াল জহির।

ফরহাদের বাবা-মা খুব করে অনুরোধ করেছিলেন দুপুরে তাদের সঙ্গে খাওয়ার জন্য। জহির আরেক দিন আসার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিদায় নিতে পারল। ট্যাক্সিতে ওঠার ঠিক আগ মুহূর্তে সাফিয়া বেগম জড়িতে ধরলেন জহিরকে, আকুল হয়ে কাঁদতে লাগলেন।

বুকের মধ্যে একটা দলা পাকানো অনুভূতি নিয়ে জহির ট্যাক্সিতে উঠল। বুকের কাছটা ভিজে গেছে টিশার্টের, সে হাত রাখল সন্তর্পণে, ফরহাদের মায়ের চোখের পানি! আজকাল বুকেও ব্যথা হয় কিছুক্ষণ পরপর, ডাক্তার দেখানো দরকার। চোখ বন্ধ করল সে, “রিপন! গান দাওনা একটা ভাই! শান্তির গান!”

সারাটা পথ কাটল নীরবতায়। হোটেলের সিঁড়িতে পা রাখতেই পেছন থেকে ডাকল রিপন, ‘স্যার, একটা কথা বলতে চাই। আমি অনেক বছর ধরে ট্যাক্সি চালাই। আপনার মতো মানুষ আমার চোখে পড়ে নাই, মন চাইতেছে আপনারে পা ছুঁয়ে সালাম করি। বন্ধুর শোকে মানুষ এত কষ্ট পায় আমি এই প্রথম দেখলাম।’

জহির হাসল, ‘তুমি ভালো ছেলে রিপন। ভালো মানুষের চোখে সবকিছু ভালো মনে হয়। খারাপটার মধ্যেও তারা ভালো কিছু খুঁজে বের করে ফেলে। বাড়ি যাও, আমি একটু ঘুমাতে চাই।’

৭.
ঝিম মেরে কিছুক্ষণ বসে রইল জহির। বুকটার মধ্যে কী যে যন্ত্রণা ! ফরহাদের বাবার মুখটা মনে পড়ছে বারবার। সাফিয়া বেগমের মমতার স্পর্শ এখনও লেগে আছে গায়ে। যন্ত্রণায় ছটফট করতে লাগলো সে। সোহেলকে ডেকে পাঠাল ফোনে। ‘একটু ড্রিংক করার ব্যবস্থা করতে পারবে? টাকা নিয়া যাও, তাড়াতাড়ি করবে।’

সময় বয়ে গেছে কতক্ষণ জানা নেই তার, ইচ্ছেও নেই জানার। চতুর্থ পেগ শেষ করতেই দরজায় আওয়াজ হলো, চোখ তুলল জহির, ‘কী ব্যাপার, রিপন?’

‘স্যার, সিগারেট আনতে বলে ছিলেন। ভাবলাম এখন দিয়ে যাই।’ খানিকটা অপ্রস্তুত সে।

‘অবাক হয়েছো? তোমার চোখে মহান ব্যক্তি বসে বসে ভরদুপুরে মদ গিলছে!’ শব্দ করে হাসল জহির, অসংলগ্ন হাসি!

‘আমি আসি, স্যার।’

‘আরে, কোথায় যাও, বসো! ছয়বছর ধরে বুকের মধ্যে যন্ত্রণা নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি, আর পারি না বুঝলে! দিন দিন জ্বালা পাহাড় সমান হচ্ছে। অসহ্য জ্বালা, কাউকে বলতে পারি না আমি, শুধু ছটফট করি। গত চার বছরে আমি কখনও ঠিকমতো খাইনি, ঘুমাইনি। এই যে, আমার শ্বাসকষ্টের অসুখ, এটাও চারবছর থেকে চলছে। বসো, কিভাবে এমন হলো বলি তোমাকে। একদিন মাঝরাতে হঠাৎ আমার দম আটকে গেল, শ্বাস নিতে পারছিলাম না আমি। আমার রুমমেট হাসপাতালে নিয়ে গেল আমাকে। ডাক্তার ফুল বডি চেকআপ করল কিন্তু শ্বাসকষ্টের কোনো কারণ খুঁজে পেল না, পাবেও না কোনো দিন। এটা হলো অভিশাপ, পাপের শাস্তি আমার!’

‘আপনি আর খাবেন না, প্লিজ স্যার! নেশা হয়ে গেছে বোধহয়। আপনার শরীরও ভালো না।’

জহির ঘর কাঁপিয়ে হাসতে লাগলো, ‘শরীর ঠিক আছে, নেশা হয় না আমার, কখনও হয় না। নেশা হলে তো মানুষ ভুলে যায় সব কিছু, আমি ভুলিনা। একটা মুহূর্তের জন্যও ভুলিনা। ছয়টা বছর ধরে অসহায় দুইটা চোখ আমাকে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। আসো, সেই চোখের গল্প বলি তোমাকে। ২০০৫-এ মাস্টার্স ফাইনাল দিয়ে আমরা যার যার বাড়ি চলে গেলাম। আমার পরিবার বলতে এক ভাই, আর ভাবী, তাদের ছোট ছোট দুইটা বাচ্চা, বাবা মা সেই ছোট বেলাতেই মারা গেছেন। বাড়িতে দুইদিনের বেশি থাকতে পারলাম না। বন্ধুবান্ধব, আড্ডা, টিএসসি, মধুর ক্যান্টিন এসবের মায়ায় চলে এলাম ঢাকায়। আমাদের একটা গ্রুপ ছিল, বুঝলে! হোসেন, শওকত, জামি, রুমি, সাজ্জাদ এরা সবাই আমরা রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। একত্রে হলে থাকতাম। আলাদা দাপট ছিল একটা। ফরহাদ মেসে থাকত, কী যে শান্ত ছিল! দেখলেই একটা হাসি দিত। বলত, ‘কই যাও, বাঘের বাচ্চা?’ ও আমাদের টাইপ ছিল না। তাই গাঢ় বন্ধুত্ব তৈরি হয়নি কখনও। কী এক কারণে সে আমাকে খুব পছন্দ করত, বুঝতাম আমি। বাড়ি থেকে বিভিন্ন খাবার নিয়ে আসত সে, পুরা ভার্সিটি চক্কর দিয়ে আমাকে খুঁজে বের করত  সেগুলো খাওয়ানোর জন্য। এই ভালোবাসা, আন্তরিকতা খুব একটা গায়ে মাখতাম না আমি।

একদিন রাতে কী হলো শোনো, আমরা সবাই হলে টিভি দেখছি। একজন এসে খবর দিলো যে রাতে হলে র‌্যাব অভিযান চালাবে, বাইরে সাদা পোষাকে ঘুড়ছে। আমাদের মধ্যে অনেকেরই অস্ত্র ছিল। সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলাম না কী করব। অনেকক্ষণ বসে ভাবলাম, তারপর সবগুলা অস্ত্র খবরের কাগজ দিয়ে আটসাঁট করে বাঁধলাম, একটা বাজারের ব্যাগে এগুলো নিয়ে পেছন দিকের দেয়াল টপকিয়ে সোজা ফরহাদের মেসে। সে তখন রান্না করছিল, আমাকে দেখেই চিৎকার দিলো, ‘কী খবর বাঘের বাচ্চা! তুমি আজ এদিকে কী মনে কইরা?’ বললাম, ‘ব্যাগটা একটু রাখবে? সে সরল হাসি দিলো, ‘তা নাহয় রাখলাম। কিন্তু কী আছে ব্যাগে?’ আমি বললাম, ‘আমার দরকারি কিছু বই আর জিনিসপত্র। বাড়ি যাচ্ছি তো, পরশু এসে নিয়ে যাব।’ আমি ব্যাগটা ওর খাটের নিচে ঢুকিয়ে দিলাম। মেস থেকে আমাদের হলটা দশ মিনিটের পথ, আমি হেঁটে চলে এলাম। তার ১০/১৫ মিনিট বাদে প্রচন্ড হট্টগোল রাস্তায়। আমরা হলের ছাত্ররা সব বের হলাম, গন্ডগোল যেই দিকে সেদিকে এগোলাম। দেখি পুলিশের একটা কাভার্ড-ভ্যান, ঠিক ফরহাদের মেসের সামনে। বুকটা ধক করে উঠল আমার। ভিড় ঠেলে সামনে গেলাম, দেখি পুলিশের হাতে আমার বাজারের ব্যাগটা। ফরহাদকে পিছমোড়া করে ঘর থেকে বের করছে। ফরহাদ অসহায় চোখে শুধু ভিড়ের দিকে তাকাচ্ছে। সেই চোখ আমাকেই খুঁজছিল, বুঝলে! কী যে আকুতি ছিল সেই চোখে! আমি ভিড়ের মধ্যে নিজেকে আড়াল করে ফেললাম। পালিয়ে গেলাম তখনই। দৌঁড়ে গেলাম এক বড়ভাই মানে পলিটিক্যাল নেতার কাছে। সে সব শুনে কিছুক্ষণ চিন্তা করল, তারপর বলল, ‘তোরা ৬ জন র‌্যাবের লিস্টের প্রথম দিকে আছিস, এক্ষুনি গা ঢাকা দে। পরিস্থিতি খুবই খারাপ। আর যে ছেলেটা ধরা পড়েছে, ওর নামে তো কোনো রেকর্ড নাই, নিরীহ ছেলে। সপ্তাহ্ দুই পরে ওকে আমি বের করে ফেলব, ইনশাল্লাহ।’

‘আমি সেই ভরসায় নিজেকে বাঁচাতে আত্মগোপন করলাম, চলে গেলাম টেকনাফ। পরে সেই বড় ভাইয়ের সহযোগিতায় চলে গেলাম ইতালি। এর মধ্যে কেউ কারো খোঁজ নেয়ারও চেষ্টা করি নাই। ইতালি যাওয়ার আগে বড়ভাইয়ের সঙ্গে একবার কথা হয়েছিল। তখনও তিনি ফরহাদকে বের করতে পারেননি, তবে ভরসা দিয়েছিলেন বের করে ফেলবেন।

‘যেহেতু হুড়োহুড়ি করে যাওয়া তাই যাওয়াটা পুরোপুরি বৈধ ছিল না। কাগজপত্রের নানা জটিলতায় জড়িয়ে গেলাম আমি। এসবের সমাধান করতে করতে প্রায় দুইবছর কেটে গেল ইতালিতে। এরপর আবার থাকা-খাওয়ার নিশ্চয়তা, চাকরি এসব গোছাতে চলে গেল আরও অনেক সময়। এই সময়গুলি কেটেছে দারুণ এক ঘোরের মধ্যে। তারপর আস্তে আস্তে ঘোর কাটল। বিবেক জেগে উঠল আমার! প্রচন্ড অপরাধ বোধে আচ্ছন্ন হলাম আমি, ফরহাদের অসহায় দৃষ্টি গ্রাস করল আমায়।’ দীর্ঘশ্বাস ফেলল জহির।

নিস্তব্ধতা নেমে এল হোটেল কক্ষে। রিপন তাকিয়ে আছে, চোখে তার অপার বিস্ময়!

‘ভেবেছিলাম দেশে ফিরে ফরহাদের কাছে ক্ষমা চাইব, কিছুটা হলেও স্বস্তি আসবে মনে। কিন্তু কে জানতো আমার জন্য কত ভয়াবহ শাস্তি অপেক্ষা করে আছে! পরের ঘটনা তো সবটাই তোমার জানা। আমার জন্য নিরাপরাধ ফরহাদ এইভাবে যন্ত্রণা পেয়ে মারা গেল। তার ভালোবাসার সুযোগ নিয়েছি আমি, মৃত্যুর আগ পর্যন্ত প্রতিটা মুহূর্তে সে হয়তো আশা করেছিল আমি আসব, বাঁচিয়ে নিয়ে আসব তাকে। আহ! কী ভয়াবহ কষ্টে মৃত্যু হয়েছে তার! ভাবলে আমি শিউরে উঠি, আমার শরীর মন জুড়ে তীব্র যন্ত্রণা শুরু হয়। সহ্য করতে পারি না! জানো, ফরহাদের বাবা মায়ের স্নেহের স্পর্শ কাঁটার মতো ফুটছিল আমার গায়ে! ওরা কেউ জানে না ফরহাদের এই পরিণতির জন্য দায়ী যে বিশ্বাসঘাতক, সে আর কেউ না আমি। উহ! কী যে যন্ত্রণা!’ চোখ বন্ধ করল জহির।

‘ওদের জন্য কিছু করতে চাই আমি, কিছু জমা টাকা আছে আমার দিয়ে যেতে চাই। জানি আমার এই পাপের কোনো প্রায়শ্চিত্ত নাই, তারপরও। ফরহাদের বোনটার জন্য, ওর ভবিষ্যতের জন্য। এই বয়সে মেয়েটা কী রকম বাস্তবতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে একবার ভাবো। নিজেকে পিশাচ মনে হয় বুঝেছো! মানুষ এমন জঘন্য কাজ করতে পারে না।’ উঠে দাঁড়াতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারালো জহির। রিপন ধরে ফেলল তাকে।

‘স্যার একটু শান্ত হন আপনি, প্লিজ!’

‘আচ্ছা শান্ত হলাম। কিছু বলবনা আর, তুমি কাল আমাকে আবার একটু সাভার নিয়ে যাবে, টাকাগুলি দিয়ে আসবে। জানি না ওরা নেবে কিনা, তাও যাব। এখন তুমি যাও, একটু ঘুমাই আমি! ঘুম হয়না আমার রিপন!’

৮.
রাত প্রায় নটা। অনেক চেষ্টা করেও একটু ঘুমতে পারল না জহির। আজও কাটবে একটা অসহনীয় রাত। পাগলের মতো কিছুক্ষণ পায়চারি করল, মনটা অসম্ভব বিক্ষিপ্ত, কি করবে, কেমন করে এই যন্ত্রণা থেকে একটু পরিত্রাণ পাওয়া যায়! শান্তিতে একটু ঘুমানো যায়! সোহেলকে ডেকে পাঠাল। বোতলের পানীয় তলায় গিয়ে ঠেকেছে, ‘আসো সোহেল। ভালো আছো’

‘জ্বী স্যার।’

‘তোমার সেই বিশেষ ব্যবস্থা সচল আছে, ব্যবস্থা করে দিতে পারবে?’

সোহেলের চোখ উজ্জ্বল হলো, ‘কখন লাগবে স্যার? বিশেষ কোনো চয়েজ থাকলেও বলতে পারেন। যেমন কেউ শ্যামলা মেয়ে পছন্দ করে, কারও আবার ফরসা পছন্দ।’

ঘর কাঁপিয়ে হাসতে লাগল জহির, পুরোই অসংলগ্ন হাসি। ‘তাই? রবীন্দ্র সংগীত জানা মেয়ে আছে?’

সোহেল খানিকটা অপ্রস্তুত।

‘আচ্ছা যাও, তোমার পছন্দ মতো নিয়ে এসো।’

ঠিক সাড়ে নটায় সোহেল এলো, ‘স্যার চলে এসেছে, এখন পাঠাবো?’

‘হ্যাঁ, পাঠাও। আর আমাকে নতুন একটা বোতল দিও।’

হাত মুখটা ধুয়ে ফেলল বেসিনে, ফ্রেশ লাগছে কিছুটা। প্রায় দশ মিনিট পর দরজায় মৃদু আওয়াজ হলো। দরজা খুলেই চোখ বিস্ফোরিত  জহিরের, সমস্ত পৃথিবী দুলছে তার, দাঁড়ানো শক্তিটুকুও বিলীন হচ্ছে ক্রমশ, দরজার অপর প্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে সস্তা প্রসাধনে আবৃত শীলা!

-নাঈমা পারভীন অনামিকা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *