তুমি আমার নিজস্ব বর্ষাকাল

আগেই বলেছি বৃষ্টির আবশ্যকতা আমার নেই
সমুদয় আবশ্যকতা আমার শুধু তুমি
তুমি সামনে এসে দাঁড়ালে চৈত্রের তীব্র দাবদাহও আমার কাছে ভরা বর্ষার মতো নরম ও শীতল মনে হয়
ভাদ্রের দুপুর বনে যায় পেঁজাতুলো মেঘে ঢাকা কাঞ্চনজঙ্ঘার ভোর
ভেজা মাটির ঘ্রাণ আমি টের পাই বুকের ভেতর, তোমার স্পর্শে
চোখের পাতা থেকে শিশির খসে পড়ে
চুলের খোঁপা থেকে তোমার টুপটাপ ঝরে পড়ে রাশি রাশি বর্ষাস্নাত কদম্ব পাঁপড়ি
তোমাকে দেখামাত্র আমার গগনজুড়ে শুরু হয় মেঘের গর্জন
ঈষৎ বাতাসে হলুদ ডানা পাখির মতো হঠাৎ পাখা মেলে উড়ে উঠলে তোমার ওড়নাটা,
হিম শীতল একটা হাওয়া বয়ে যায় হৃদয়ের সমস্ত উঠোনজুড়ে।
তুমি আমার যৌবনবতী আষাঢ়, ঘন ঘোর বরষায় মুখরিত শ্রাবণ
তোমার উপস্থিতি আমার হিয়ার অন্তঃপুর ভাসিয়ে দেয় তুমুল বৃষ্টিছটায়
যখন তুমি হাসো, বৃষ্টিভেজা মেঠো পথের মতো নরম হয়ে যায় আমার হৃদয়
কাঁঠাল তলায় ঝরে পড়া পাতার বুকে আলগোছে পা ফেলে হেঁটে বেড়ানো শালিকের মতো
তুমি যখন ফেলো প্রতিটি পদক্ষেপ
আমার মনে হয়, এগিয়ে আসছে মেঘবতী- মেঘের কন্যা
প্রখর রৌদ্রতাপে মলিন হতে থাকা চারপাশ হঠাৎ কেমন হয়ে ওঠে ঘন সবুজের বন
এই শহরের ইট পাথরের জঞ্জালকেও তখন মনে হয় লাউয়াছড়ার নিড়িবিলি আশ্রম।
আগেই বলেছি, বৃষ্টি এবং বর্ষা নিয়ে তেমন বিশেষ আদিখ্যেতা আমার নেই
আমার সমুদয় আদিখ্যেতা, সকল সুস্থতা ও সকল পাগলামীর আধার তুমি
তিলোত্তমা আমার, তুমিই আমার নিজস্ব বর্ষাকাল।

রবিউল করিম মৃদুল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *