তখন আমার ছিলো বিহান বেলা,
টুকটাক জমেছিল বেশ হাতের পসরা।
হঠাৎই নজরে পড়লো উজ্জ্বল রঙা ফুলটি।
অবাক হয়ে বললাম, তোকে দেখিনি কেন আগে? নাম কি রে তোর?
ও বললো,”উমমম যতদূর জানি, সবাই গোলাপ বলেই ডাকে।
তোর কি রে তাতে? তুই বুঝি লিখবি আমায় নিয়ে?”
আমি বললেম, আমি তো কবি, মুগ্ধ তোর রুপে।
আমি তো লিখি কতো কিছু নিয়েই,
না হয় দুকলম আরো লিখলাম বাড়িয়েই।
সে বললো, “ইসসস কি আনন্দ আজ আমার!
জানিস কবি! আমি রোজ শুনি তোর কবিতা, প্রতি রাতেই
আনন্দে ঢেউ খেলে যায় আমার হৃদয়টাতে,
গাইতে ইচ্ছে করে, ইচ্ছে করে নাচতে, ছন্দের তালে তালে নেচে নেচে বন মাতাতে দোল পূর্ণিমা রাতে।”
এরপর আমি চলে এলাম খুশী মনে
বসলাম লিখতে বাতায়ন খুলে
আমি লিখেই গেলাম লিখেই গেলাম
পাতার পর পাতা, খাতার পর খাতা।
তার রুপ, তার নূপুর, তার টিকলি, মেহেদী রাঙা রঙ,
বাতাসে ভেসে আসা তার গন্ধমাখা হৃদয়, তার কাঁটায় আমার রক্ত লেগে থাকা,
তার চারপাশে জোনাকির আনাগোনা, তার পাপড়িতে আমার ঠোটের স্পর্শ,
হঠাৎই থমকে দাঁড়ালাম একটা লাইনে জিজ্ঞাসা চিহ্নতে!
আচ্ছা, আমি কি তবে ভালবেসে ফেললাম তাকে?
পরদিন খুব ভোরে গিয়ে দাঁড়ালাম তার সামনে
আমার সঙ্গী ছিল একটা, হ্যাঁ সত্যিই একটা ভীষণ অপরাধী নজর,
আনত মাথা, বুক টা কেমন ভার ভার লাগছে
শূণ্য বুকে কখন জানি রাগ, শাসন জন্মেছে,
কেমন একটা সম্রাট সম্রাট ভাব তাদের।
আজ যেন কোন কিছুর উপর অধিকার জন্মেছে।
কিন্ত একি! হতবাক হলাম
আমার প্রিয় গোলাপ আমার ভালবাসার ফুলটি
হাসছে মিটিমিটি এক চিত্রকারের প্রতি চেয়ে
আর চিত্রকর তার ছবিটি আঁকছে যতন করে!
লালচে কপোল, সিঁথিকাটা লাল সিঁদুর সাজিয়ে।
আমি দেখলাম আমার বুকের পশম গুলি
রাগে লাল হয়ে গেছে কালো থেকে,
কান, নাক দিয়ে যেন জ্বলন্ত কয়লার ট্রেনের ধোঁয়া বেরুচ্ছে।
রাগে, ক্ষোভে ফেটে পড়লাম আমি,
সে ক্ষণে মনে হচ্ছিলো যেন একটা একটা করে
তার পাপড়ি গুলি ছিঁড়ে ফেলি।
আমি চিৎকার দিয়ে উঠলাম “গোলাপ! ছলনাময়ী গোলাপ”
একটু চমকে সে মৃদু হেসে বললো, এসেছিস কবি? কি লিখেছিস বল তবে।
কাল যে ছিল তোর গোলাপ, রাত পেরুতেই সে গোলাপি হয়েছে।
এখনো সে তোদের জন্যই জন্মে, তোদের জন্যই বাড়ে,
সবার চোখেই মুগ্ধতা আনে, ভালবাসা বিলোয় আগেরই মতন, তোদের মাঝে ভালবাসার অনুপ্রেরণা আনে, ভালবাসাময় পৃথিবী গড়তে চায়, ভালবাসা কি এতো সংকীর্ণ হয়!
তোর কবিতারা কি বিলোয় না ভালবাসা পৃথ্বিময়?
আমি বুনোফুল, কারো জন্য গোলাপ হবো
কোথাও বা গোলাপি নাম পাবো।
এভাবেই, ভালবাসা ছড়াবো…….
-ফুয়াদ স্বনম