প্রিয় রূপা,
শেষ মুহূর্তে যখন দম বন্ধ হয়ে আসছিল লজ্জায়, ভয়ে, ঘৃণায়
কার কথা মনে পড়ছিল তোমার?
যখন তুমি মরে যেতে যেতে অভিমানে, যন্ত্রণায় চোখ বন্ধ করে ফেলছিলে, অথবা খুলে রাখতে পারছিলে না
কার চেহারাটা ভাসছিল তোমার চোখে?
বাবার, না ভাইয়ের?
নাকি তোমার ভালোবাসার মানুষটির?
নাকি অন্য কোন পুরুষের?
মাকে মনে পড়ছিল খুব?
কান্না পাচ্ছিল?
প্রচন্ড ঘৃণায় থুতু ফেলতে ইচ্ছে করছিল কারো মুখের ওপর?
কার মুখে?
সমাজের? রাষ্ট্রের?
নাকি নিজেরই মুখে?
নারী হয়ে জন্মানোর অপরাধে?
সব জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দিতে ইচ্ছে করছিল?
অসহায় লাগছিল খুব?
যন্ত্রণা সইতে পারছিলে না?
বিচার চাইছিলে মনে মনে?
কিসের বিচার?
ওরা তোমায় জোরপূর্বক রেইপ করল তার?
নাকি মেরে ফেলল তার?
তেমন কিছু চাইছিলে না বোধহয়।
কেমন করে চাইবে?
কম তো দেখনি, এই রাজ্যে এসবের বিচার মেলে না।
রেইপ করে মেরে ফেলার চেয়ে বড় অপরাধ এখানে কটুক্তি।
রাজা বা রাজপরিবারের কারো নামে একটা টু শব্দ করে কেউ পার পায় না।
অথচ রেইপ করে, খুন করে ওরা হেসেখেলে বেড়ায়।
সে তুমি নিশ্চয়ই জানতে
এই মাটিতেই তো বেড়ে উঠেছিলে তুমি।
প্রিয় রূপা,
তুমি মরে গিয়ে বরং বেঁচেই গেছ
আমরা যারা বেঁচে আছি, তারা বরং মৃত।
জানো তো, মৃত মানুষের কোন বোধ থাকে না
আমাদেরও তা নেই।
-রবিউল করিম মৃৃদুল