প্রতিরাতেই হস্তমৈথুনের অভ্যাস ছিলো আমার। বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে পর্ণ দেখে দেখে করতাম। সেদিনের রাতটাও এরকমই ছিলো। ইচ্ছে হলো দেশি কিছু দেখার। দেশি একটা ওয়েবসাইটে ঢুকলাম। নতুন একটা পর্ণ এসেছে। কোন কিছু না ভেবেই প্লে করলাম। হাতের কারুকাজ শুরু করবো; ঠিক তখনই চেহারাটা পরিচিত লাগলো। মেয়েটার বয়স খুব বেশি হবেনা। স্কুলে পড়ুয়া হবে। ভালো ভাবে খেয়াল করে দেখি মেয়েটা আমার নিজেরই বোন। আমার বোন ইন্দ্রানী। আমার বোন একটি ছেলের সাথে খোলামেলা অবস্থায়। ছেলেটা আমার অপরিচিত না। আমারই খুব কাছের বন্ধু অবিনাশ। বেশিক্ষণ স্ক্রিনে চোখ রাখতে পারলাম না। নিজের বোনের শরীর দেখার ইচ্ছা বোধহয় কোন ভাইয়েরই হয়না। প্রতিরাতে কত মানুষের মা-বোনকে কল্পনায় এনে কত কিছু করেছি; নিজের বোনকে দেখার পর মাথা পুরো হ্যাং হয়ে গেলো। কিভাবে পারলো ইন্দ্রানী? কত আদর করে বড় করছি ওকে। যা আবদার করেছে তাই দিয়েছি; তারপরও কিভাবে পারলো?
ভাবতে ভাবতেই দেখি অবিনাশের ফোন। রিসিভ করলাম।
-হ্যালো
(হেসে) কিরে কেমন আছিস?
(নিজেকে সামলে) কিছু বলবি?
তোকে একটা লিংক পাঠিয়েছি দেখে নিস। বেশ খাসা মাল। দেখে অনেক মজা পাবি। ওটা দেখ আর হাতের কাজ কর।
কেমনে পারলি তুই?
দেখেছিস তাহলে। দেখারই কথা। সারাদিনই তো পর্ণ নিয়ে পড়ে থাকিস।
অবিনাশ, কেন করলি?
তুই ই তো বলিস মেয়ে মানেই মাল। এদের ভালোবাসতে হয়না; খেয়ে ছেড়ে দিতে হয়। আমি তোর কথাই শুনলাম।
তাই বলে আমার বোনের সাথেই করতে হবে?
তা না হলে তুই তো বুঝতি না।
করেই বা কেনো তুই ভিডিও করে নেটে ছেড়ে দিলি?
তোকে শিক্ষা দিতে।
কিসের শিক্ষা?
মনে আছে তুই মায়ার সাথে কি করেছিলি? ভালোবাসার কথা বলে শরীর ভোগ করে ছেড়ে দিয়েছিলি।
তাতে তোর কি হয়েছে? মায়া তো তোর কেউ না?
মায়াকে আমি ভালোবাসতাম। মায়ার চোখের পানি দেখে সেদিনই প্রতিজ্ঞা করেছিলাম তোকে একটা শিক্ষা দিবো?
তাই বলে এরকম শিক্ষা?
এর চেয়ে ভালো শিক্ষা আর কিছুই হতে পারেনা শুভ্র।
আমি আর সহ্য করতে না পেরে লাইন কেটে দিয়ে ফোন অফ করে দিলাম। নিজের উপর রাগ হচ্ছে, পাশাপাশি অবিনাশের উপর। হঠাৎ চোখ গেলো টেবিলের উপরে। ছোট্ট একটা খাম টেবিলের উপর। খাম খুলতেই পেলাম একটি চিঠি।
“প্রিয় ভাইয়া;
তুমি আমাকে খুব ভালোবাসতে। যা চেয়েছিলাম তাই দিয়েছিলে। তোমার বন্ধু অবিনাশকে আমি ভালোবাসতাম। বিশ্বাস করতাম খুব। এতোটাই বিশ্বাস করতাম যে নিজেকে পুরোপুরি তার হাতে সপে দিয়েছিলাম। এখন আমার পেটে তার বাচ্চা। ৪ মাস হচ্ছে গর্ভধারণের। তোমার বন্ধুকে বলতে সে সবকিছু অস্বীকার করলো। অস্বীকার করলো আমাদের বাচ্চাকে। আজ তার সাথে ঝগড়া করেছিলাম। ও নেটে আমাদের ভিডিও ছেড়ে দিবে বলেছিলো। আমি ভেবেছিলাম রাগের মাথায় বলেছে। পরে দেখি সত্যি সত্যি ছেড়ে দিয়েছে। আমার যা ক্ষতি হওয়ার হয়েছে। এতে আমার আক্ষেপ নেই। আমার আক্ষেপ আমার জন্য পুরো পরিবারের সম্মান নষ্ট হয়ে গেছে। সবাই আমাকে ভালোবাসতো সবাইকে আমি ছোট করে ফেলেছি। বাবা-মাকে কিছু লিখতে পারলাম না। তারা সহ্য করতে পারতোনা। তুমি পারবে জানি। তুমি সবচেয়ে ভালো বুঝো আমাকে। জানি তুমি বুঝবে আমার কথা। সবাইকে শাস্তি দিয়ে আমার বেঁচে থাকা সম্ভব না। আমাকে ক্ষমা করো। বাবা-মাকে সামলে রেখো। কষ্ট হচ্ছে খুব পরবর্তী পরিস্থিতি কি হবে ভেবে। তুমি সবার খেয়াল রেখো ভাইয়া। তোমাকে খুব ভালোবাসি।
ইতি
ইন্দ্রানী।”
কিছু না ভেবেই ছুটে গেলাম ইন্দ্রানীর ঘরে। দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। কয়েকবার কড়া নাড়ার পর যখন সাড়া পেলাম না; নিজেকে আর সামলাতে পারিনি। ধাক্কা দিতে লাগলাম। শব্দে ঘুম ভেঙে গেলো সবার। মা-বাবা কিছুই বুঝতেছেনা আমার কাজকারবার। দরজা ধক্কাধাক্কিতে শেষমেষ খুলে যায়। ভিতরে ঢুকেই বাতি জ্বালিয়ে দিলাম। মেঝে ভর্তি লাল রক্ত। টপ টপ করে পড়ছে ইন্দ্রানীর হাত থেকে। পরম শান্তিতে ঘুমাচ্ছে সে তার চিরচেনা খাটটাতে। সাদা চাদর লাল হয়ে গেছে রক্তের দাগে। মা এক চিৎকারে অজ্ঞান হয়ে গেলেন। সেই যে পড়লেন আর কোন দিনও উঠে দাঁড়াতে পারেননি। বাবা মেয়ের দিকে তাকিয়ে নীরবে বসে পড়লেন। এরপর যা হবার। পাশের বাসার চাচার পরামর্শে পুলিশের ঝামেলা এড়াতে সেই রাতেই দাফন করা হলো আমার প্রিয় বোনটিকে। জানাজা-কাফনের কাপড় কোনটিই আর তার পড়া হলোনা। নীল রঙের যে জামাটা আমি কিনে দিয়েছিলাম ওর আবদারে; ওইটা পড়েই চলে গেলো আমাকে ছেড়ে। ওকে শুইয়ে দিয়ে আমি চলে এলাম ওর রুমে। রুমের সব ঠিক আগের মতোই আছে; শুধু নেই আমার বোনটা। আমি আর থাকতে পারলাম না। চলে এলাম আমার রুমে।
আমার রুমে এসে কল দিলাম অবিনাশকে। অবিনাশ ফোন ধরলোঃ
কিরে এত রাতে ফোন দিয়েছিস কেন? তুই ঘুমাবিনা বলে কি আমরা কেউ ঘুমাবোনা? তোর বোনকে আপন করে নেওয়ার জন্য বলবে তো? দেখ এসব আমি পারবোনা।
না; আমার বোনকে আপন করে নিতে হবেনা। চাইলেও তুই আর পারবিনা।
মানে?
ওর দাফন কাজ শেষ করে এলাম।
মানে?
আত্নহননকেই পন্থা হিসেবে বেছে নিলো ছোট্ট পাখিটা।
(নীরবতা)
তুই আজ সফল। আমাকে শিক্ষা দিয়ে দিলি। আজীবন মনে থাকবে।
আর কথা বলতে পারলাম না। ফোন কেটে দিলাম। গলা ধরে গিয়েছিলো। জানি এরপর অবিনাশ অপরাধবোধে ভুগবে। এমন এক অপরাধবোধ যে অপরাধবোধের সমাপ্তি সে কখনোই করতে পারবেনা।
-জিসান রাহমান